‘প্রচলিত ভুল’ বইয়ের প্রকাশকের কথাঃ بسم الله الرحمن الرحيم الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর মুখপত্র মাসিক আলকাউসার। বিগত ১১ বছর থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। আলহামদু লিল্লাহ, তাঁরই মেহেরবানিতে উলামা, তুলাবা ও সকল শ্রেণির মুসলমানের কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে পত্রিকাটি। বাংলাভাষাভাষীদের ইলমি ও দ্বীনি খোরাক মেটাতে আলকাউসার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন পাঠক সমাজ। আলকাউসারে প্রথম থেকে অদ্যাবধি যে বিভাগগুলো পাঠকবর্গ অধিক পছন্দ করে আসছেন তার একটি প্রচলিত ভুল'। অশিক্ষা, ভুলশিক্ষা, খণ্ডিত শিক্ষার কারণে সমাজে বহু প্রকারের ভুল ছড়িয়ে পড়ে। কখনও অনিচ্ছাকৃত উচ্চারণ বিভ্রাটের কারণেও ভুল ছড়ায়। তবে ভুল যে কারণেই হোক তা সংশোধন হয়ে যাওয়াই কাম্য। মাসিক আলকাউসার সে চেষ্টাটুকুই করে যাচ্ছে। পাঠকপ্রিয়তার কারণে প্রচলিত ভুল’এর প্রথম সংকলনটি (ডিসেম্বর ২০১১ পর্যন্ত) নভেম্বর ২০১২তে প্রকাশ করেছিল রাহনুমা প্রকাশনী। এরপর থেকে ব্যাপক চাহিদার কারণে তাদেরকে বইটি বহুবার প্রকাশ করতে হয়েছে। সংকলনটি প্রথমবারের মতো পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ায় এবং বিগত কয়েক বছর তা সুন্দরভাবে প্রকাশ ও পরিবেশনের জন্য আমরা তাদের শুকরিয়া আদায় করছি। তাদের হাতে বইটি প্রকাশের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর এখন তা প্রকাশিত হচ্ছে মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর প্রকাশনা বিভাগ থেকে। এখানেও মহররম ১৪২৬ হিজরী থেকে মহররম ১৪৩৩ হিজরী পর্যন্ত প্রকাশিত প্রচলিত ভুল’গুলোই সংকলিত হয়েছে। পুনঃপ্রকাশের আগে মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর দারুত তাসনীফ থেকে তাতে আবার নযর বুলানো হয়েছে। তথাপি কোন ভুল-ভ্রান্তি বা অসঙ্গতি কারও নযরে পড়লে তা আমাদেরকে জানানোর অনুরোধ রইল। যেন পরবর্তী সংস্করণে তা ঠিক করে নেওয়া যায়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা তাঁর মেহেরবানিতে মারকাযুদ দাওয়াহ, মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক ছাহেব ও মাসিক আলকাউসারকে কবুল করুন, সকল শুভাকাঙ্ক্ষী এবং সংশিষ্ট সকলকে উত্তম প্রতিদান দিন, দুনিয়াআখেরাতে ভালো রাখুন এবং প্রচলিত ভুল’-এর এ সংকলনটি মুসলমানদের জন্য উপকারী করুন। আমীন। আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ রঈস, মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা
সংখ্যাভিত্তিক সূচিঃ* ভুল বিশ্বাস: দোকান খোলার পর প্রথম বিক্রি বাকিতে না করা, ফেরতও না নেওয়া/৩১ * হাদীস নয় : দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত ইলম অন্বেষণ কর/৩২ * ভুল উচ্চারণ : ‘আকামত’ ‘মুসওয়াদ্দা’ ‘আল-বিসমিল্লাহ'/৩৩ * ভুল ঘটনা: জাবের রা.এর দুই শিশু ছেলের বকরি জবাই খেলা/৩৩ * ভুল বিশ্বাস : বিনা ওযুতে আব্দুল কাদের জিলানী রহ.-এর নাম মুখে নেওয়া/৩৪ * হাদীস নয় : যার কোন পীর নেই তার পীর শয়তান/৩৫ * ভুল ঘটনা : হযরত হাসান-হোসাইন রা.-এর ঈদের নতুন জামার জন্য কান্নাকাটি/৩৫ * ভুল উচ্চারণ : আহমেদ/আহাম্মদ/৩৬ * খাইরুল/শফীকুল/৩৭ * ভুল নাম : নবীউল্লাহ/৩৭ * রাসূল মিয়া/৩৭ * সালামের কয়েকটি ভুল/৩৭ * বলার ভুল : মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া/৩৯ * ভুল প্রবাদ : মহাভারত কি অশুদ্ধ হয়ে যাবে?/৩৯ * বোরাকুন নবী: একটি কাল্পনিক ছবি/৩৯ * একটা মারাত্মক জাল হাদীস : আমি ‘মীম’ বিহীন আহমাদ এবং ‘আইনবিহীন আরব/৪০ * নামের ভুল : মুরসালীন/মুত্তাকীন/৪১ * একটি নামের ভুল ব্যবহার : আব্দুল/৪১ * সালাম দেওয়ার একটা ভুল পদ্ধতি/৪১ * ভুল ঘটনা : হযরত আব্দুল কাদের জিলানী রহ.-এর বাঘের আকৃতি ধারণ/৪২ * ভুল প্রচলন : জানাযার নামাযের আগে মৃত ব্যক্তি........ .............তাকে না জানা বিষয়ের ইলম দান করেন/১৯৩ * একটা রসম : ফাতেহায়ে ইয়াদহম পালন/১৯৪ * ভুল পদ্ধতি : নামাযে তাকবীরে তাহরীমা না বলে রুকুতে চলে যাওয়া/১৯৫ * হাদীস নয় : আযানের জবাবে পুরুষ পাবে এক লক্ষ নেকি মহিলা দুই লক্ষ নেকি/১৯৬ * একটা কু-রসম : শ্বশুরবাড়ি প্রবেশের আগে নববধূর পা ধোয়ানো/১৯৬ * দুটো ভুল ধারণা : (ক) খাওয়ার পর বরতন ধুয়ে খাওয়া কি সুন্নত?/১৯৭ * (খ) খাওয়ার পর মুখমণ্ডলে ও পায়ের তালুতে হাত মোছা কি সুন্নত?/১৯৭ * খাওয়ার পর মুখমণ্ডলে ও পায়ের তালুতে হাত মোছা প্রসঙ্গে একটি প্রশ্নোত্তর/১৯৮ * তওবার জন্য কি ওযু জরুরি?/২০৩ * হাদীস নয় : মেরাজে নবীজির সাতাশ বছর লেগেছিল/২০৫ * হাদীস নয় : একটি জনপদের ওপর পবিত্রতা যখন পাখা বিস্তার করে উড়ে যায়, আকাশ তখন শহীদের রক্ত ধারণ করে/২০৬ * ভুল চিন্তা : কবরের দিকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করা কি নিষেধ?/২০৭ * ভুল তথ্য : সুরমা কি তুর-এর তাজাল্লি থেকে সৃষ্টি?/২০৭ * ভুল ধারণা : কষ্টের সংবাদ দিয়ে না গেলে কবরে বৃক্ষ জন্মায় না/২০৭ * ভুল ধারণা : রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যমানায় কি দর্জি ছিল না?/২০৮ * ভুল তথ্য : মুনাজাতে মকবুল-এ যা কিছু ছাপা হচ্ছে সবই কি থানভী রহ.-এর সংকলন?/২০৮ * ভুল ধারণা : যফর আহমদ উসমানী রহ. কি শাব্বীর আহমদ উসমানী রহ.-এর ভাই?/২০৯ * হাদীস নয় : লেনদেন কর অপরিচিতের মতো আর তোমাদের পারস্পরিক আচরণ যেন হয় ভাইয়ের মতো/২১০ * ভুল মাসআলা : আত্তাহিয়্যাতুর শুরুতে কি আউযুবিল্লাহ্-বিসমিল্লাহ্ পড়তে হয়?/২১০ * ভুল মাসআলা: প্রত্যেক মুসল্লির কি সানার পর আউযুবিল্লাহ্-বিসমিল্লাহ্ পড়তে হয়?/২১০ * একটা ভিত্তিহীন ঘটনা : হে নূহ! কিশতি ভেঙে ফেল/২১১ * নাম সঠিকভাবে বলা ও লেখা/২১২ * ভুল মাসআলা : কুরবানীর শরিক সংখ্যা কি বেজোড় হওয়া জরুরি/২১৩ * একটা অবাস্তব দাবি : বাস্তবেই কি তারা শিয়াদের ইমাম/২১৩#
Mawlana Muhammad Abdul Malek (জন্মঃ ১৯৬৯) বাংলাদেশের একজন ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি ঢাকার ইসলামী গবেষণামূলক উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মারকাযুদ্ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার উলূমুল হাদীস অনুষদ এবং রচনা ও গবেষণা বিভাগের প্রধান এবং মাসিক আলকাউসারের তত্ত্বাবধায়ক। এছাড়াও তিনি ২০১২ সালে সরকারের গঠিত বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনের সদস্য এবং হাদীসশাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ গবেষক ও পণ্ডিৎ ব্যক্তিত্ব। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় চাঁদপুর শাহরাস্তির খেড়িহর কওমি মাদ্রাসায়। সেখানে তিনি মিশকাত জামাত পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি পাকিস্তানের করাচিতে বিনোরি টাউন জামিয়াতুল উলুম আলইসলামিয়ায় ভর্তি হন। ১৯৮৮ সালে তিনি সেখানে তাকমীল ( ইসলামিক স্টাডিজ-এ মাস্টার্স সমমানের ডিগ্রি) সমাপন করেন। এরপর তিনি ঐ জামিয়াতেই মাওলানা আব্দুর রশীদ নোমানীর তত্ত্বাবধানে তিন বছর হাদীসশাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা (তাখাসসুস ফিল হাদীস) গ্রহণ করেন এবং ১৯৯১ সালে তাখাসসুস ফিল হাদীস সমাপন করেন। এরপর তিনি দুই বছর করাচির দারুল উলুম মাদ্রাসায় মুফতি তাকী উসমানীর তত্ত্বাবধানে ফিকহ এবং ফতোয়া বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ( তাখাসসুস ফিল ইফতা ) গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৩ সালে তাখাসসুস ফিল ফিকহ ওয়া আল-ইফতা সমাপন করেন। পরবর্তীতে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে আল্লামা আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ-এর তত্ত্বাবধানে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছর হাদীসশাস্ত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার কাজ করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি ঢাকায় উচ্চতর ইসলামি শিক্ষা ও দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ্ দাওয়াহ আলইসলামিয়া যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাসচিব এবং উলুমুল হাদীস অনুষদের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৫ সাল থেকে মারকাযুদ্ দাওয়াহ আলইসলামিয়ার মুখপত্র হিসাবে মাসিক মাসিক আলকাউসারের প্রকাশনা শুরু হয় এবং তখন থেকেই তিনি এই ম্যাগাজিনের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।এছাড়াও তিনি ঢাকার শান্তিনগরের আজরুন কারীম জামে মসজিদে জুমার নামাজের পরিচালনা করেন এবং জামিয়াতুল উলুম আলইসলামিয়া কওমি মাদরাসায় হাদীসশাস্ত্রে অধ্যাপনা করেন। তিনি ২০১২ সালে সরকার গঠিত বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনের একজন সদস্য।